

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ব্যস্ততম কুতুপালং বাজারটি রোহিঙ্গা কালোবাজারিদের আকামের নিরাপদ আখড়ায় পরিণত হয়েছে। মোবাইলের দোকান, কাপড়ের দোকান, জুতা-স্যান্ডেলের দোকান, মুদির দোকান ও কম্পিউটার দোকানের আড়ালে বৈধ-অবৈধ সব ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে রোহিঙ্গারা। এসব দেখার কেউ নেই বললেই চলে। দিব্যি এত আকাম চললেও রহস্যজনক নিরবতায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। বাজারের অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতাই রোহিঙ্গা। কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে তাদের বাজারে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ফলে কুতুপালং বাজারকে ঘিরে ইয়াবা, হুন্ডি, জঙ্গি আস্তানা ও নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বাজারে আহামরি রোহিঙ্গা ডাক্তার বসে আছে, যাদের কোনো শিক্ষা সনদ নেই, অথচ তারা অবাধে ওষুধ বিক্রি করছে। শত শত রোহিঙ্গা পরিচালিত ঔষধের দোকান থেকে নকল ও দুই নাম্বারী ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। খাস জমি ও সরকারি জায়গায় গড়ে ওঠা এই বাজার স্থানীয়দের কাছে এখন পরিচিত অপরাধীদের আখড়া হিসেবে। ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এপিবিএন পুলিশের নজরদারি থাকলেও বাজার ঘিরেই চলছে কোটি কোটি টাকার মাদক লেনদেন, এমনকি এখান থেকেই দেশ-বিদেশে সন্ত্রাসীদের যোগাযোগ হয় বলে জানা গেছে। বাজারের পরিচিত রোহিঙ্গা ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন ও সাদেক মিয়ানমার থেকে এসে প্রথমে হুন্ডি ব্যবসা শুরু করে, পরে ইয়াবা ও মোবাইল ব্যবসার আড়ালে কোটি টাকার কারবারে জড়িয়ে পড়ে। দু’জনই আল ইয়াকিনের সক্রিয় সদস্য বলে অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে ইদ্রিস ও ইলিয়াস নামের দুই ভাইয়ের একাধিক দোকান রয়েছে, যারা ইয়াবা ব্যবসার পাশাপাশি মিয়ানমারের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছে বলেও অভিযোগ আছে। তাদের পাশাপাশি সেলিম, সোলায়মান, মো. আমিন ভুট্টোসহ সহস্রাধিক রোহিঙ্গার দখলে বাজারের ব্যবসা-বাণিজ্য। ক্যাম্পের বাইরে এসে দোকান করার নিয়ম না থাকলেও প্রতিদিন হাজারো রোহিঙ্গা বাইরে এসে দোকান চালাচ্ছে এবং আবার ভেতরে ফিরে যাচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়ছে স্থানীয়রা। স্থানীয় মার্কেট মালিক ও প্রভাবশালীদের আস্কারা পেয়ে রোহিঙ্গারা বাজার ও আশপাশে বসতি গড়ে তুলছে। এমনকি বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র করে দেওয়ার কন্ট্রাক্টও নিচ্ছে স্থানীয় একটি চক্র।
স্থানীয়দের প্রশ্ন,কার আশকারায় রোহিঙ্গারা কুতুপালং বাজার দখল ও নিয়ন্ত্রণের সুযোগ পাচ্ছে, আর কেন প্রশাসন রহস্যজনক নীরবতা।
এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) জিয়ার হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি। সব কিছু তথ্য নেয়া হচ্ছে। যেখানে অপরাধ হবে বা অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে সেখানে নজরদারি বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাঠকের মতামত